নিমাই উত্তর দিলেন, “তোমরা আমাকে জগদীশ ও হিরণ্য পণ্ডিতের বাড়িতে নিয়ে চল।”
“কেন সেখানে কি হচ্ছে?”
“তাঁরা একাদশীর প্রসাদের আয়োজন করেছে। তাই আমি সেখানে যেতে চাই।”
জগন্নাথ মিশ্র ভাবতে লাগলেন, একটা ছোট ছেলে কীভাবে একাদশী সম্পর্কে জানে? আর যেহেতু তাঁরা কাউকে কিছু জানাননি, সেহেতু নিমাই কি করে প্রসাদের বিশাল আয়োজনের কথা জেনে গেল? তিনি ভাবতে লাগলেন তাঁর যাওয়া উচিত এবং খোঁজ নেওয়া উচিত। তাই তিনি নিমাইকে কাঁধে নিয়ে নদী পার হয়ে স্বরূপগঞ্জের দিকে যাত্রা শুরু করলেন। জগদীশ ও হিরণ্য পণ্ডিত গোদ্রুম দ্বীপে থাকতেন।
তাঁরা যখন পৌঁছালেন, তখন সেখানে ১০৮ রকমের নৈবদ্য দিয়ে শ্রীবিগ্রহগণকে ভোগ নিবেদন করা হচ্ছিল। একাদশীতে ভক্তগণ উপবাস করেন, কিন্তু শ্রীবিগ্রহগণকে ভোগ নিবেদন করা হয়। জগন্নাথ মিশ্র জিজ্ঞেস করলেন, “এখানে কি হচ্ছে?” তাঁরা উত্তর দিলেন, “ আজ একটি বিশেষ বাৎসরিক উৎসবের দিন।

তখন জগন্নাথ মিশ্র নিজ পুত্রের কথা তাদের খুলে বললেন। তাঁরা উপলব্ধি করতে পারলেন যে, এই শিশুটি নিশ্চয়ই স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ: নয়ত সে কীভাবে তা জানতে পারল? তাই তাঁরা শিশু নিমাইকে সমস্ত প্রসাদ দিলে নিমাই হাসিমুখে তা গ্রহণ করলেন।
বৃন্দাবনের ভক্তরা জানেন না যে, শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা হৃদয় দিয়ে শ্রীকৃষ্ণে পূজা করতে চান, তাঁর সেবা করতে চান এবং তাঁর প্রতি গভীর ভালবাসা অনুভব করেন। ঠিক এভাবেই এই ভক্তরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত ভক্তি অনুভব করেছিলেন। তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর সেবা করতে আগ্রহী ছিলেন।
No comments:
Post a Comment