জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
সবাইকে নমস্কার

Thursday, 17 March 2016

ভগবানের দিব্য আবির্ভাব লীলা (পর্ব - ০২)

তাই অদ্বৈত হুঙ্কার করে বলতে লাগলেন, “হে কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! এবং গঙ্গাজল ও তুলসী দিয়ে শালগ্রাম শিলার পূজা করতে লাগলেন। তিনি উপবাস করে জোরে জোরে চিৎকার করলেন, “হে প্রভু! দয়া করে নেমে আসুন। যদি আমার নাম অদ্বৈত হয় (যার মানে হচ্ছে অভিন্ন)। তাহলে আমার নামকে সত্যে পরিণত করুন। আপনি নেমে আসুন। গৌরাঙ্গ! গৌরাঙ্গ!” শ্রীবাস ঠাকুরও প্রকৃত ভাগবত ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে নেমে আসার জন্য কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তাই ভগবান, জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতার পরিবাওে আবির্ভূত হলেন।
একদিন জগন্নাথ মিশ্র এক স্বপ্ন দেখলেন, হঠাৎ একটি উজ্জ্বল আলো তাঁর হৃদয়ে 



প্রবেশ করল। তিনি দেখতে পেলেন, কৃষ্ণ তাঁর হৃদয়ে অবস্থান করছেন এবং তাঁর হৃদয় থেকে শচীমাতার হৃদয়ে প্রবেশ করেছেন। তারপর শচীমাতার গর্বে প্রবেশ করলেন।
জগন্নাথ মিশ্র লক্ষ করছিলেন, শচীদেবী আরো সুন্দর হয়ে উঠছেন- তাঁকে দেখতে লক্ষ্মী দেবীর মতো লাগছে। লোকজন স্বেচ্ছায় দ্বারে এসে বলত, “হে ব্রাহ্মণ, কিছু অর্থ গ্রহণ করুন।” তাকে ভিক্ষা করতে হতো না, বিভিন্ন লোকজন এসে ভিক্ষা দিয়ে যেত। তিনি পূর্বে কখনই ধনী ছিলেন না। ভাগ্যদেবী যেন তাঁর গৃহে পদার্পন করেছেন, তাই সবকিছু শুভলক্ষণযুক্ত হয়ে উঠেছিল।
জগন্নাথ মিশ্র শচীদেবীকে বললেন, “হে প্রিয় পতœী, লোকজন এসে আমাকে অর্থ প্রদান করছে। এর মানে কী?” শচীদেবী বললেন “হয়ত কোন মহাত্মা আমার গর্ভে অবস্থান করে সবকিছুকে মঙ্গলময় করে তুলছেন। আমি প্রায়ই স্বর্গের দেবতাদের এসে প্রার্থনা করতে দেখেছি।”
অনেক দেবতা এসে শ্রীচৈতন্যদেবের প্রার্থনা করছিলেন, “ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়, জয় জয় শ্রীচৈতন্য জয় নিত্যানন্দ, জয় অদ্বৈতচন্দ্র, জয় গৌরভক্তবৃন্দ! হে গৌর! হে প্রিয় কৃষ্ণ! আমরা বুঝতে পারছি যে আপনি এই কলিযুগে গৌরাঙ্গরূপে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন। প্রতি যুগেই আপনি অবতার রূপে আসেন। এসে মুক্তি প্রদান করেন, কিন্তু কৃষ্ণপ্রেম দান করাটা আপনার জন্য বিরল। কিন্তু এই অবতারে আপনি ভগবৎ প্রেম অকাতওে দান করতে যাচ্ছেন।”
“আমরা স্বর্গলোক থেকে আপনার আশীর্বাদ লাভের জন্য এসেছি। আমরা জড় জগতিক আশীর্বাদ চাই না। আমাদের তা যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। স্বর্গে ইন্দ্রিয়তৃপ্তির অনেক ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের শুধু দুটো সমস্যা: একটি হচ্ছে দৈত্যরা মাঝে মাঝে স্বর্গ জয় করে উপভোগ করার জন্য আমাদের আক্রমণ করে। হিরণ্যকশিপু, রাবণ, বলি মহারাজ- অনেকেই আক্রমণ করেছে। কখনো আমরা জয়ী হই, কখনো তারা আমাদের পরাজিত করে- এটি খুব বড় সমস্যা নয়। অপর সমস্যাটি হচ্ছে অত্যধিক ইন্দ্রিয় তর্পণ। অপ্সরা, গন্ধর্ব, সুন্দর নদনদী, বাগান, অসীম ক্ষমতা, ইন্দ্রিয় তর্পণের এত বেশি সুযোগ সুবিধা এখানে রয়েছে যে, আমরা আপনার প্রেমময়ী সেবা বিস্মৃত হই। অত্যধিক ইন্দ্রিয়তৃপ্তির জন্যই আমরা আপনার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত।”
প্রভুপাদ বলেছিলেন যে, তাঁর অনেক অনুসারী স্বর্গে যাবেন। যদি আমরা কৃষ্ণ সেবাকে গুরুত্ব না দিই, তবে আমাদের বিপদে পড়তে হবে। কিন্তু এই দেবগণ, যারা ভগবানের কাছে এসেছেন, তারা কৃষ্ণ সেবাকেই আলোকপাত করেছেন, তারা বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তাঁদের খেদ, “আমরা প্রকৃত ভগবৎ প্রেম চাই। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আপনি পৃথিবীতে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন। মানুষেরা আপনার কৃপা লাভ করবে। আপনার কৃপা থেকে আমাদের বঞ্চিত করবেন না, আমরাও কৃষ্ণপ্রেম লাভ করতে চাই।”
শ্রীচৈতন্যদেবের ইচ্ছায় দেবতাদের ছোট ছোট ছায়া দেখা যাচ্ছিল। শচীমাতা বললেন, “এ কী? আমার ঘরে কে? হে নৃসিংহদেব! আমাদের রক্ষা করুন। ভূত-প্রেত আসছে।”
জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতা তাঁদেও অনুভূতিগুলো মিলিয়ে দেখলেন। তাঁরা বুঝতে পারলেন যে, বিশেষ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। শচীমাতার গর্ভকাল নয় মাস অতিক্রান্ত হচ্ছিল। আজকাল নয় মাস হবার পর প্রসব না হলে লোকজন দ্রুত সিজারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু ভগবান তের মাস মাতৃগর্ভে ছিলেন। শচীমাতা তাঁর পিতা জ্যোতিষশাস্ত্রে পারঙ্গত নীলাম্ব চক্রবর্তীর কাছে গেলেন। শচীমাতা জানতে চাইলেন কোথাও কোন সমস্যা আছে কিনা। নীলাম্বর চক্রবর্তী বললেন, “সবকিছু ঠিক আছে। তোমার ছেলে বিশেষ এক পূর্ণিমাতে আবির্ভূত হবে।”

[ ‘গৌরাঙ্গ’- শ্রীল জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

No comments:

Post a Comment