জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে জয় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
সবাইকে নমস্কার

Monday, 29 August 2016

রাজা ইন্দ্রদু্্যম্ন এবং শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের শুভাবির্ভাব

সত্যযুগে, মহারাজ ইন্দ্রদু্্যম্ন মালব নামে একটি প্রদেশ শাসন করতেন। রাজধানী ছিল অবন্তী। সরাসরি ব্রহ্মা থেকে আগত বংশ পরম্পরায় ইন্দ্রদু্্যম্ন পঁচিশতম পুত্র। তিনি ভগবআন শ্রীবিষ্ণুর একজন মহান ভক্ত ছিলেন, সেজন্য সমস্ত সদ্গুণাবলী তাঁর মধ্যে বিকশিত হয়েছিল।
একবার তাঁর দৈনন্দিন পূজা সমাপন করে মহারাজ ইন্দ্র পূজারীকে অনুরোধ করলেন  “হে পুরোহিত! অনুগ্রহ করে এই ধরণীতে সেই মহাতীর্থের সন্ধান করুন, যেখানে আমি পরমব্রহ্মাকে মুখোমুখি দর্শন করতে পারি।” রাজার আদেশ অনুশারে পুরোহিত সমাগত তীর্থযাত্রীকে রাজপ্রাসাদে সমবেত হতে বললেন। করজোড়ে পুরোহিত সমাগত তীর্থযাত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, “হে তীর্থযাত্রীগণ আপনারা কি এমন কোনো তীর্থ স্থানের কথা অবগত আছন, যেখানে আমাদের মহারাজ স্বচক্ষে ভগবানকে দর্শন করতে পারেন?”

Sunday, 28 August 2016

গুরুদেবের পদসেবা

একজন কুলগুরু দুইভাইকে দীক্ষা দিয়ে চলে গেছেন। অনেকদিন গুরুদেব আসেন না এর মধ্যে দুইভাই ঝগড়া করে পৃথক হয়ে বসবাস করতে থাকে। এইভাবে কিছুদিন গত হতে চলল। একদিন ছোট বৌমা রাস্তার ধারে কোন কর্মে ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় গুরুদেবকে আসতে দেখে ছোট বৌমা সমস্ত কাজ ফেলে গুরুদেবকে প্রণাম করে হাতের দ্রব্যাদি নিয়ে গুরুদেবের বাম পা ধুতে আরম্ভ করলেন। গুরুদেব বললেন- “আগে ডান পা ধুতে হয়।” ছোট বৌমা বলে উঠলেন, “আপনার ছেলেরা আলাদা হয়েছে। সবকিছু ভাগ করে নিয়েছে। আপনার ডান পা বড় ছেলের এবং বাঁ-পা ছোট ছেলের। আমি এখন যদি ডান পা ধুই তাহলে এখনই মারা-মারি লেগে যাবে। সুতরাং আপনি দয় করে ওদের বাড়ী থেকে যান পা ধুয়ে আসুন।
।। হিতোপদেশ।।
কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নিজ নিজ স্বার্থে গুরু সেজে শিষ্যদের অর্থ অপহরণ করার চেষ্টা করে। বছরে একদিন আসে ও শিষ্যের কাছে প্রণামী স্বরূপ কিছু নিয়ে চলে যায়। তারা শিষ্যের নিত্য মঙ্গলের কোন চিন্তাই করে না। ফলে শিষ্যদের কোন অন্যায় আচরণ করতে বাধে না। তারা কোন সৎ শিক্ষা না পাওয়ার পলে এমনকি গুরুদেবকেও ভাগ করতে বসেছে। প্রকৃত মঙ্গলাকাঙ্খিী শিষ্য সৎগুরুর চরণাশ্রয় করে স্নেহময়ী সেবার দ্বারই গুরুদেবকে সন্তুষ্ট করেন।

গুরুদেবের পদসেবা

একজন কুলগুরু দুইভাইকে দীক্ষা দিয়ে চলে গেছেন। অনেকদিন গুরুদেব আসেন না এর মধ্যে দুইভাই ঝগড়া করে পৃথক হয়ে বসবাস করতে থাকে। এইভাবে কিছুদিন গত হতে চলল। একদিন ছোট বৌমা রাস্তার ধারে কোন কর্মে ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় গুরুদেবকে আসতে দেখে ছোট বৌমা সমস্ত কাজ ফেলে গুরুদেবকে প্রণাম করে হাতের দ্রব্যাদি নিয়ে গুরুদেবের বাম পা ধুতে আরম্ভ করলেন। গুরুদেব বললেন- “আগে ডান পা ধুতে হয়।” ছোট বৌমা বলে উঠলেন, “আপনার ছেলেরা আলাদা হয়েছে। সবকিছু ভাগ করে নিয়েছে। আপনার ডান পা বড় ছেলের এবং বাঁ-পা ছোট ছেলের। আমি এখন যদি ডান পা ধুই তাহলে এখনই মারা-মারি লেগে যাবে। সুতরাং আপনি দয় করে ওদের বাড়ী থেকে যান পা ধুয়ে আসুন।
।। হিতোপদেশ।।
কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নিজ নিজ স্বার্থে গুরু সেজে শিষ্যদের অর্থ অপহরণ করার চেষ্টা করে। বছরে একদিন আসে ও শিষ্যের কাছে প্রণামী স্বরূপ কিছু নিয়ে চলে যায়। তারা শিষ্যের নিত্য মঙ্গলের কোন চিন্তাই করে না। ফলে শিষ্যদের কোন অন্যায় আচরণ করতে বাধে না। তারা কোন সৎ শিক্ষা না পাওয়ার পলে এমনকি গুরুদেবকেও ভাগ করতে বসেছে। প্রকৃত মঙ্গলাকাঙ্খিী শিষ্য সৎগুরুর চরণাশ্রয় করে স্নেহময়ী সেবার দ্বারই গুরুদেবকে সন্তুষ্ট করেন।

আকশের দিকে থুথু ফেললে সেই থুথু নিজের গায়েই পড়ে

এক আদুরে বালক তার মাতা-পিতার কাছে বায়না করতে লাগল “আমাকে ওই চাঁদ এবং তারাগুলি এনে দাও।” মাতা-পিতা তাকে অনেক বোঝালেন, “বাবা! ওগুলোকে মানুষ ছুঁতে পারে না।” কিন্তু বালকটি কিছুতেই শুনল না। তখন, মাতা-পিতা তাকে উঁচু ছাদের উপর উঠিয়ে দিলেন। কিন্তু কিছুতেই চাঁদ কিম্বা তারাগুলোকে ধরা ছোঁওয়ার নাগাল পাওযা যাচ্ছে না দেখে সে অত্যন্ত রেগে গেল। সে চাঁদ ও তারাগুলোকে এত উঁচুতে ধরে রেখেছে। আচ্ছা এক্ষুনি তোমাকে মজা দেখাচ্ছি। এই বলেই সে আকাশের দিকে থুথু ফেলতে লাগল, তখন সেই থুথু কারই গায়ে পড়তে লাগল।

।। হিতোপদেশ।।

আকশের দিকে থুথু ফেললে সেই থুথু নিজের গায়েই পড়ে। তাতে আকাশের কোন ক্ষতি হয় না। সেই রূপ বদ্ধজীব বিশেষ করে মানব সমাজ সাধু গুরু বৈষ্ণবের প্রতি নিন্দা, কুবাক্য ঘৃণা প্রয়োগ করলে তা নিজেই উপরই পড়ে, গুরু বৈষ্ণবের কিছুই হয় না। বুদ্দিমান ব্যক্তি ভগবান ও ভক্তের নিন্দ ও কুবাক্যাদি প্রয়োগ করে নিজের জীবনকে কলঙ্কিত করে না।

Friday, 26 August 2016

পরম শান্তি লাভ

কোন গাঁয়ে অমর নামে এক ছেলে ছিল। তার পিঠে একটি ফোঁড়া হওয়াতে সে নিদারুণ যাতনায় ছটফট করতে লাগল। এমন কি, সে সহজে মরবার জন্য বিষ খাওয়ার কথা চিন্তা করতে লাগল। ছেলেটির এই দশা দেখে তার মা, মাসি, পিসি, ঠাকুমা একটি তালপাতার পাখা নিয়ে ফোঁড়ার ওপর বাতাস করতে লাগল, কখনও বা ফুঁ দিতে লাগল। এইভাবে তারা তার ব্যথা উপশম করবার চেষ্টা করল।
প্রতিবেশী একজন লোক এস বলল, ফোঁড়ার ব্যাথা ভুলাতে হলে অজ্ঞান করে রাখা উচিত। আর একজন এস বলল, ‘অজ্ঞান করে রেখে কিছু লাভ নেই, প্রাণ

Thursday, 7 April 2016

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অধ্যাপনা

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অনুসারীদের কয়েকজন বয়সে তাঁর চেয়ে বড় ছিলেন। খুব অল্প বয়সেই শ্রীচৈতন্যদেব অধ্যাপনা শুরু করেন। অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ছিলেন তিনি। মাত্র এগার বছর বয়সেই পি.এইচ.ডিগ্রিধারীর সম পর্যায়ভুক্ত হন এবং তাঁর নিজের পাঠশালার অধ্যাপক হন। এই অল্প বয়সেই তিনি ভারতের সেরা শিক্ষকদের একজনরূপে পরিগণিত হন।
মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সেই তিনি নিমাই পণ্ডিত  নামে সবার কাছে পরিচিত হন। 


শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও শুকপাখি

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অবতরণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সংকীর্তন আন্দোলন প্রবর্তন করা। তাঁর অবতরণের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো ভক্ত তাঁকে ভালোবেসে যে আনন্দ পায় তা অনুভব করা। এই অনুভূতি লাভের একমাত্র উপায় হচ্ছে নিজেই ভক্তরূপে অবতীর্ণ হওয়া। তাই যখন তিনি ভক্তভাব নিয়ে আবির্ভূত হন, তিনি কাউকে বুঝতে দিতে চাইতেন না যে, তিনি স্বয়ং ভগবান; বরং তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একজন বিনীত সেবকরূপে অভিনয় করতেন।
প্রেমবিবর্ত নামক গ্রন্থে জগদানন্দ পণ্ডিত  বর্ণনা করেছেন, শৈশবে তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সঙ্গে পাঠশালায় যেতেন এবং তাঁরা অলকানন্দা গঙ্গার পাশে


Sunday, 3 April 2016

তুলসী-প্রদক্ষিণ মন্ত্র

যানি কানি চ পাপানি ব্রহ্মহত্যাদিকানি চ।
তানি তানি প্রনশ্যন্তি প্রদক্ষিণ পদে পদে ॥    


অনুবাদ :

তুলসী দেবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্রহ্মহত্যাসহ গুরুতর পাপ সমূহ পদে পদে বিনষ্ট হয়।

তুলসী প্রণাম মন্ত্র


বৃন্দায়ৈ তুলসী দেব্যৈ প্রিয়ায়ৈ কেশবস্য চ।
কৃষ্ণভক্তিপ্রদে দেবী! সত্যবত্যৈ নমো নমঃ ॥

অনুবাদ :
কেশবপ্রিয়া বৃন্দাদেবী যিনি কৃষ্ণ-ভক্তি প্রদান করেন সেই সত্যবতী
তুলসী দেবীকে আমি বারবার প্রণাম নিবেদন করি।

পঞ্চতত্ত্ব প্রণাম মন্ত্র

(জয়) শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।
শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ ॥

অনুবাদ :
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, প্রভু নিত্যান্দ, শ্রীঅদ্বৈত আচার্য, শ্রীগদাধর এবং
শ্রীবাস আদি গৌরভক্তবৃন্দের জয় হোক।

শ্রীজগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রাদেবীর প্রণাম মন্ত্র


নীলাচলনিবাসায় নিত্যায় পরমাত্মনে।
বলভদ্র সুভদ্রাভ্যাং জগন্নাথায় তে নমঃ  ॥

অনুবাদ :
পরমাত্মা স্বরূপ যাঁরা নিত্যকাল নীলাচলে বসবাস করেন, সেই বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথদেবকে প্রণতি নিবেদন করি।

শ্রীরাধারাণী প্রণাম


তপ্তকাঞ্চন-গৌরাঙ্গী রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানুসুতে দেবী প্রণমামি হরিপ্রিয়ে ॥

অনুবাদ:
শ্রীমতী রাধারাণী, যাঁর অঙ্গকান্তি তপ্ত কাঞ্চনের মতো এবং যিনি বৃন্দাবনের ঈশ্বরী, যিনি মহারাজ বৃষভানুর দুহিতা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী, তাঁর চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি জানাই।

শ্রীকৃষ্ণ প্রণাম


হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধো দীনবন্ধো জগৎজতে।
গোপেশ গোপিকাকান্ত রাধাকান্ত নমোহস্তু তে ॥

অনুবাদ :
হে আমার প্রিয় কৃষ্ণ, তুমি করুণার সিন্ধ, তুমি দীনের বন্ধু, তুমি সমস্ত জগতের পতি, তুমি গোপিকাদের ঈশ্বর এবং শ্রীমতি রাধারাণীর প্রেমাস্পদ, আমি তোমার শ্রীপাদপদ্মে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।

শ্রীপঞ্চতত্ত্ব প্রণাম

পঞ্চতত্ত্বাত্মকং কৃষ্ণং ভক্তরূপস্বরূপকম।
ভক্তাবতারং ভক্তাখ্যং নমামি ভক্তশক্তিকম্ ॥
অনুবাদ:

ভক্তরূপ, ভক্তস্বরূপ, ভক্ত অবতার এবং ভক্ত শক্তি এই পঞ্চতত্ত্বাত্মক শ্রীকৃষ্ণের শ্রীচরণকমলে প্রণতি নিবেদন করি।
ভক্তরূপ-শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, ভক্তস্বরূপ-নিত্যানন্দ প্রভু, ভক্তাবতার-অদ্বৈত আচার্য প্রভু, ভক্ত-শ্রীবাস ঠাকুর, ভক্তশক্তি-শ্রীগদাধর পণ্ডিত।

শ্রীগৌরাঙ্গ প্রণাম

নমো মহাবদান্যায় কৃষ্ণপ্রেমপ্রদায় তে।
কৃষ্ণায় কৃষ্ণচৈতন্যনানাম্নে  গৌরত্বিষে নমঃ ॥


অনুবাদ :
আমি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই, যিনি স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ এবং অন্যান্য অবতার অপেক্ষা উদার, তিনি অত্যন্ত দুর্লভ কৃষ্ণপ্রেম প্রদান করেছেন, তাঁকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি জানাই।

জগন্নাথ মিশ্রের স্বপ্ন

জগন্নাথ মিশ্র মাঝে মাঝে দুষ্ট নিমাইকে শাসন করতে চাইতেন। একদিন তিনি স্বপ্নে দেখলেন, এক ব্রাহ্মণ আবির্ভূত হয়ে তাঁকে বলছেন, “আপনি আপনার ছেলেকে কীভাবে শাস্তি দেবেন? তিনি স্বয়ং কৃষ্ণ। স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি নারায়ণ। আপনি কিভাবে তাঁকে শাসন করবেন?”
তখন তিনি ভাবতে লাগলেন, “আপনি কী বলতে চান? নিমাই আমার ছেলে, আর আমি ওর পিতা। সে সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে কি না তা দেখা আমার দায়িত্ব। তাকে আমার শিক্ষা দেওয়া উচিত এবং শাসন করা উচিত।” ব্রাহ্মণ আবার বললেন, “আপনার পুত্র স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি পুরুষোত্তম। তিনি কৃষ্ণ। আপনি ঈশ্বরকে কী শিক্ষা দেবেন?”
জগন্নাথ মিশ্র উত্তর দিলেন, “পিতা পিতা-ই, পুত্র পুত্র-ই, সে কে তা দেখার বিষয়

কুকুরছানাকে মুক্তি দান

শ্রীকৃষ্ণ মুক্তি দান করেন। তাই তাঁর আরেক নাম মুকুন্দ। কিন্তু শ্রীচৈতন্যদেব শুধু মুক্তিই দান করেন না, তিনি প্রেমও দান করেন। তিনি তখন তিন-বছরের বালক। একদিন কয়েকটি কুকুর ছানাকে তাঁর বাড়ির পাশে খেলা করতে দেখলেন। তাঁকে আসতে দেখে কুকুরছানাগুলো দৌড়ে পালাল, কিন্তু একটি থেকে গেল। তাই তিনি ভাবলেন, “আমি এটিকে পুষব।’ কুকুরটির গলায় দড়ি বেঁধে ঘরে নিয়ে এলেন এবং জড়িয়ে ধরে আদর করলেন।
কিন্তু শচীমাতা তা দেখে বললেন, “এসব কী করছ? তুমি ব্রাহ্মণের ছেলে, 


Sunday, 27 March 2016

শ্রীবৈষ্ণব প্রণাম

বাঞ্ছাকল্পতরুভ্যশ্চ কৃপাসিন্ধুভ্য এব চ।
পতিতানাং পাবনেভ্যো বৈষ্ণবেভ্যো নমো নমঃ ॥
অনুবাদ:

সমস্ত  বৈষ্ণব ভক্তবৃন্দ, যাঁরা বাঞ্ছাকল্পতরুর মতো সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে পারেন, যাঁরা কৃপার সাগর এবং পতিত পাবন, তাঁদেও চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।

শ্রীল প্রভুপাদ প্রণতি

নমো ওঁ বিষ্ণুপাদায় কৃষ্ণপ্রেষ্ঠায় ভূতলে।
শ্রীমতে ভক্তিবেদান্ত স্বামীনিতি নামিনে ॥
নমস্তে সারস্বতে দেবে গৌরবাণী প্রচারিণে।
নির্বিশেষ-শূণ্যবাদী পাশ্চাত্যদেশ তারিণে।

অনুবাদ:
শ্রীকৃষ্ণের চরণাশ্রিত ও একান্ত প্রিয়ভক্ত কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।। হে প্রভুপাদ, হে সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের প্রিয় শিষ্য, কৃপাপূর্বক শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচারের দ্বারা নির্বিশেষ ও শুন্যবাদপূর্ণ পাশ্চাত্যদেশ উদ্ধারকারী, আপনাকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।

শ্রীগুরু প্রণাম

ওঁ অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জনশলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ ॥


অনুবাদ:
অজ্ঞতার গভীর অন্ধকারে আমার জন্ম হয়েছিল, এবং আমার গুরুদেব জ্ঞানের আলোক বর্তিকা দিয়ে  আমার চক্ষু উন্মীলিত করলেন।
তাঁকে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি।

ব্রাহ্মণ নিবেদিত নৈবেদ্য গ্রহণ (২য় পর্ব)

বিশ্বরূপ দেখলেন তাঁর পিতামাতা কান্নাকাটি করছেন আর বাকি সবাই মুখ গোমরা করে বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “কী হয়েছে তোমাদের? সমস্যা কী?” তারপর জানতে পারলেন যে, এই ব্রাহ্মণ তাঁদের অতিথি এবং তাঁরা অতিথি সৎকার ভালোভাবে করতে পারছেন না।
অতিথি সেবার নিয়ম হচ্ছে, তাঁকে স্বয়ং নারায়ণের মতো সেবা করতে হবে। এই নিয়মটি বৈদিক ব্রাহ্মণ পরিবারে খুব কঠোরভাবে পালন করা হতো। তাঁরা সত্যিই অতিথি সেবা করতে চেয়েছিলেন। তাই সবাই খুব বিমর্ষ হয়ে গেলেন। 


Saturday, 26 March 2016

ব্রাহ্মণ নিবেদিত নৈবেদ্য গ্রহণ (১ম পর্ব)

একদিন এক ব্রাহ্মণ ভিক্ষুক জগন্নাথ মিশ্রের বাড়িতে এলেন। তিনি গোপাল বিগ্রহের পূজা করতেন। তিনি এসে জগন্নাথ মিশ্রের সঙ্গে কৃষ্ণকথা আলোচনা করছিলেন। জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতা খুবই অতিথিপরায়ণ ছিলেন। বিশেষত কোনো বৈষ্ণব অতিথি তাঁদের গৃহে প্রসাদ গ্রহণ করলে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দিত হতেন। তাই একজন বৈষ্ণব ভক্তকে গোপাল বিগ্রহসহ ভ্রমণ করতে দেখেই তাঁরা তাঁকে অনুরোধ করলেন, “কৃপাপূর্বক কিছু প্রাসাদ গ্রহণ করুন।” ব্রাহ্মণ বৈষ্ণব 

চোরদের বিভ্রান্তি

এক সময় নিমাই বাড়ির বাইরে রাস্তায় হাঁটছিল, তখন দু’টি চোর তাঁকে দেখতে পেয়ে একজন আরেকজনকে বলতে লাগল, “দেখ, এই ছেলেটা সবেমাত্র এক-দু পা হাঁটতে শিখেছে। ওর গায়ে কত দামী দামী অলংকার। এই সোনার 

Thursday, 24 March 2016

একাদশীর প্রসাদ গ্রহণ

শ্রীচৈতন্যদেব যখন ছোট্ট শিশু, সবেমাত্র এক পা, দু পা করে হাঁটতে আর আধো আধো কথা বলতে শিখেছেন, তখন একদিন তিনি কাঁদতে লাগলেন। কিছুতেই আর সেই কান্না থামে না, তাঁর পিতা জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কাঁদছ কেন?” তারপর তিনি বৈদ্য নিয়ে এলেন। কিন্তু বৈদ্য বললেন যে, নিমাইয়ের কোনো অসুখ হয়নি। অবশেষে জগন্নাত মিশ্র বললেন, “কি করলে তুমি কান্না থামাবে?”
নিমাই উত্তর দিলেন, “তোমরা আমাকে জগদীশ ও হিরণ্য পণ্ডিতের বাড়িতে নিয়ে চল।”
“কেন সেখানে কি হচ্ছে?”


Sunday, 20 March 2016

প্রেমের অস্ত্র

ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যখন এসেছিলেন তিনি সংহারের অস্ত্র নিয়ে আসেননি কিন্তু তিনি এসেছেন তাঁর প্রেমের অস্ত্র, তাঁর ব্যক্তিগত সৌন্দর্য্য, বিনয়, মৃদঙ্গ, করতাল এবং তাঁর ভক্তদের নিয়ে। তিনি বদ্ধ জীবদের হৃদয়কে জয় করার জন্য এই প্রেমের অস্ত্র নিয়ে এসেছেন।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

বৈষ্ণব সদাচার পালন

কেউ অতি সহজে মুক্তি পেতে পারে কিন্তু কৃষ্ণপ্রেম অর্জন করা প্রকৃতপক্ষে অত্যন্ত কঠিন। শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেমের জন্য হরিনামের প্রতি ও বৈষ্ণবের প্রতি অপরাধকে বর্জন করতে হয়। অপরাধ বর্জনের সাথে সাথে উপযুক্ত বৈষ্ণব সদাচার পালন করতে হয়। সদাচার প্রকৃতপক্ষে আমাদের অপরাধ বর্জনে সহযোগিতা করে।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

প্রার্থনার তাৎপর্য

প্রার্থনা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কার্য, এটি ভক্ত ও ভগবানের মধ্যে একটি একান্ত কথোপকথন। অক্রুর কেবল বন্দনার দ্বারা পূর্ণতা অর্জন করেছিলেন। স্কন্দ পূরাণে প্রার্থনার মহিমা উল্লেখ রয়েছে, “ যে ভক্তের জিহ্বা সর্বদা প্রার্থনার দ্বারা সজ্জিত এমনকি সাধু ব্যক্তিরাও তাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন এবং এরূপ ভক্তরা দেবতাদেরও আরাধ্য।” এটি কৃষ্ণে সাথে আমাদের সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে কারণ আমারা তাঁর নিকট প্রার্থনা করছি, যেহেতু এটি ভগবানের সাথে আমাদের যোগাযোগ।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

ভক্তগণ

একজন ভক্তের পরিস্থিতি অনুসারে জীবন যাপন করা উচিত। কেউ অভিজাত পরিস্থিতিতে,  কেউ দারিদ্রে, কেউ মধ্যম অবস্থায়। যে যেই পরিস্থিতিতেই থাকুক না কেন আমাদের কৃষ্ণভাবানার ক্ষেত্রে দ্বায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কৃষ্ণ আমাদের ধনী বা দারিদ্ররূপে স্বীকার করেন না। তিনি আমাদের  স্বীকার করেন কিভাবে কৃষ্ণসেবায় নিয়োজিত হই তার ভিত্তিতে।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

ভক্তসঙ্গের গুরুত্ব

ভক্ত যদি অনুভব করে যে, “আমি ভক্ত সঙ্গ ছ্ড়াাই কৃষ্ণভাবনায় হতে পারি” সেটি খুব বিপদজনক পরিস্থিতি। আমরা ভক্তদের থেকে যতো বেশি পৃথক হব তত বেশি মায়ার আক্রমণের স্বীকার হব। জড় জগতের নকশা করা হয়েছে সংগ্রাম করার জন। তাই, শ্রীল প্রভুপাদ কৃষ্ণভাবনা মন্দিরসমূহ, সম্প্রদায় ও খামার প্রজেক্টসমূহ তৈরি করেছেন যেন ভক্তরা ভক্ত সঙ্গে বাস করতে পারে।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

শিষ্যদের শ্রেণীবিভাগ

নির্দেশ পালন একটি মৌলিক আবশ্যকতা। আমরা যদি নির্দেশ পালন না করি তাহলে আমরা পতিত শিষ্য। আমরা যদি নির্দেশসমূহ পালন করি তাহলে আমরা মধ্যম শিষ্য হিসেবে বিবেচিত হব। আমরা যদি গুরুদেবের অনুপস্থিতিতে গুরুদেবের নির্দেশের মাধ্যমে গুরুদেব কি চান তা অনুধাবন করতে পারি তাহলে আমরা উত্তম শিষ্য।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

দলগত প্রয়াস

আমরা যখন একটি দলগত প্রয়াস করি ভগবান তখন অধিক সন্তুষ্ট হন। ধারণাটি হল একই দীক্ষা গুরু অথবা শিক্ষাগুরুর অধীনে আমরা গুরুভ্রাতা ও গুরুভগ্নীরা যেন ভাই বোনের মতো একত্রে কাজ করি। আমরা কিভাবে একত্রে সহযোগিতা করি সেটিই সাফল্য। সেটিই কৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করে। তিনি দেখেন যে আমরা একত্রে সেবা করার জন্য আমাদের অহংকার, আমাদের আত্মস্বার্থ ত্যাগ করছি। একত্রে সেবা করা মানে সকলের স্বভাব এক না হওয়ায় উপযুক্ত সমন্বয় সাধন করা। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। আমরা অন্যদের গুণ দর্শন করি এবং উচ্চতর উদ্দেশ্যের জন্য অন্যদের নেতিবাচক দিকগুলো এড়িয়ে যাই। এটিই হচ্ছে সহযোগিতা ও যোগাযোগের মাধ্যমে একতা এবং প্রেমের মাধ্যমে উপলদ্ধি।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

ভগবান শ্রীচৈতন্যর অনবদ্য অবদান

শুদ্ধ ভক্তিমূলক সেবা আত্মার জন্য সন্তোষজনক কার্য। তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বিশেষতঃ শুদ্ধভক্তি প্রচার করেছেন। এটি তাঁর অনবদ্য অবদান। এমনকি সমগ্র বৈদিক সংস্কৃতিতে নারদ মুনি ও অন্য কয়েকজন আচার্য্য ব্যতীত শুদ্ধভক্তিমূলক সেবা প্রচার করেছেন এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু খুব কঠোর ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর সকল অনুগামী যেন কেবল শুদ্ধভক্তি প্রচারের এই সততা বজায় রাখেন। তাঁর কিছু অনুগামী যখন শুদ্ধভক্তি প্রচার করছেন না এমন  কারো কাছে  যেত তিনি তাদের পরিত্যাগ করতেন।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

চরিত্র গঠন

ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র, উন্নত চরিত্রের সকল ব্যক্তির ব্রহ্মচর্য জীবনে নিয়োজিত হওয়া উচিত। বর্তমানে আধুনিক শিক্ষা চরিত্র গঠনকে অবহেলা করে কারণ এটি ব্রহ্মচারী থাকার সুযোগ প্রদান করে না। প্রকৃতপক্ষে, ধর্ম সম্পর্কে যথোপযুক্তভাবে প্রশিক্ষিত হবার জন্য কয়েক বছর ব্রহ্মচর্য আশ্রমে থাকা উচিত। তারপর তারা ব্রহ্মচারী থাকতে পারে অথবা সন্ন্যাসী হতে পারে অথবা তারা বিবাহ করতে পারে এবং ভক্ত গৃহস্থ হিসেবে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারে। এই পদ্ধতিটি অনাদিকাল থেকে চলে এসেছে এবং কৃষ্ণভাবানমৃত আন্দোলনেও তা প্রচলিত রয়েছে। আশ্রমকে সেবা করার এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি উপযুক্ত চরিত্র গঠন করে।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

বৈষ্ণব অপরাধ

আমরা যখন বৈষ্ণব অপরাধ করি তা আমাদের ভক্তির কুঁড়িকে মূল থেকে উচ্ছেদ করার মতো। এটি পুষ্টি প্রাপ্ত হয় না। তখন আমরা পদ্ধতিগতভাবে শুকিয়ে যাই। আমরা শ্রবণ, কীর্তন, অধ্যয়ন, বিগ্রহ অর্চনা, গ্রন্থ বিতরণ প্রভৃতির প্রতি রুচি হারাই। এর চেয়ে খারাপ আর কি হতে পারে। আমরা চরমে ভক্তিমূলক সেবা হারাই।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

মন নিয়ন্ত্রণ

মন হচ্ছে ইন্দ্রিয়সমূহের আসন, মনকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমাদের মনকে প্রশিক্ষিত করার কর্তব্য অনুধাবন করা প্রয়োজন। আমাদের প্রভেদ নিরুপণ করতে হয় এবং মাঝে মাঝে মনকে সমালোচনা করতে হয়। আমাদের ভক্তি ও মায়ার পার্থক্য নিরুপণ করা প্রয়োজন।
[শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ]

Friday, 18 March 2016

নিমাইয়ের মাতৃভক্তি

একদিন নিমাই তাঁর মায়ের প্রতি খুব রেগে গেলেন। তখন তিনি ছিলেন নিতান্তই শিশু, সবেমাত্র হাঁটতে শিখেছেন। রেগে গিয়ে তাঁর কোমল হাত দিয়ে শচীমাতাকে মুষ্ট্যাগাত করলেন। এত ছোট বাচ্চা সত্যি কাউকে আঘাত করতে পারে না। কিন্তু শচীমাতা তাতে এমনভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন যেন তিনি সত্যিই খুব আঘাত পেয়েছেন।
অন্য মহিলারা নিমাইকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বলতে লাগলেন, “মাকে আঘাত করা উচিত হয়নি। তাঁর জ্ঞান ফিরিয়ে আনতে চাইলে দুটো নারিকেল নিয়ে আসতে হবে।”
তখন নিমাই দৌড়ে গিয়ে দুটো নারিকেল নিয়ে এলে সবাই অবাক হয়ে গেলেন। এ ছোট্ট ছেলেটা দুটো নারিকেল কোথা থেকে নিয়ে এল? নিমাই তাঁর মাকে নারিকেলগুলো দিয়ে বলল, “আমি আর কখনো তোমাকে আঘাত করব না।” শচীমাতার জ্ঞান ফিরে এলে তিনি আদরের নিমাইকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।

শচীমাতার কাছে নিমাইয়ের আবদার

একদিন শচীমাতা নিমাইকে কোলো নিয়ে হাঁটছিলেন। হঠাৎ নিমাই কাঁদতে লাগল। শচীমাতা বললেন, “কান্না থামাও, তুমি যা চাও আমি তাই দেব।” “সত্যি বলছ! আমি যা চাই তাই দেবে?” নিমাইকে শান্ত করার জন্য তিনি বললেন, “হ্যাঁ, তুমি যা চাও আমি তাই দেব।” তখন পূর্ণিমার চাঁদ তার স্নিগ্ধ  আলো ছড়াচ্ছিল। ছোট্ট নিমাই বলল, “আমি ওই চাঁদ, আমাকে ওটা এনে দাও।”
কখনো কখনো পূর্ণিমার চাঁদ দেখে মনে হয় হাত বাড়ালেই তা ধরা যাবে। শিশু 


বিস্ময়কর অতিথি

শ্রীচৈতন্যমঙ্গলে বর্ণিত আছে, একবার শিশু অবস্থায় নিমাই জগন্নাথ মিশ্রের অঙ্গণে হামাগুড়ি দিচ্ছিলেন। তখন জগন্নাথ মিশ্র মূল ঘরের পাশে ঘুমাচ্ছিলেন। শচীমাতা শ্রীচৈতন্যদেবকে কোলো নিয়ে বারান্দায় এলেন। ঠিক তখনই উচ্চতর গ্রহলোক থেকে এসে দেবতারা শচীমাতার অঙ্গনে সমবেত হলেন। তাঁদের মধ্যে কারো বিশেষ বর্ম, কারো দুটো মাথা এবং সকলেই অপরূপ সাজে সজ্জিত ছিলেন। সাথে অনেক ব্রাহ্মণও এসেছিলেন। শচীমাতা তাঁর স্বামীকে ডাকতে চাইলেন। শব্দ করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু একটুও নড়তে পারলেন না। তখন চিৎকার 

ভগবানের নামকরণ

ছয়মাস বয়সে নিমাইয়ের অন্নপ্রাশনের আয়োজন করা হয়। শিশু নিমাই প্রথমবারের মতো মিষ্টান্ন গ্রহণ করবে। শিশুর জন্মে দু-এক মাস পরেই নামকরণ অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু নিমাইয়ের পিতা-মাতা নামকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন না করায়, নামকরণ ও অন্নপ্রাশন একই দিনে করতে সিদ্ধান্ত নিলেন। পুত্রের অন্নপ্রাশন উৎসবে যোগদান করে নামের শুভ আদ্যক্ষর ঠিক করার জন্য তাঁরা নীলাম্ব চক্রবর্তীকে নিমন্ত্রণ করলেন। তিনি এসে

ভগবানের নাম প্রচার

যখন শ্রীচৈতন্যদেব খুব ছোট ছিলেন, তখন তিনি খুব কান্না করতেন এবং কিছুতেই কান্না থামাতে চাইতেন না। তাই জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতা একজন চিকিৎসকসহ অনেক লোককে ডেকে আনতেন- কিন্তু কেউ কোনো সমস্যা বের করতে পারতেন না। একদিন কয়েকজন মহিলা যখন বলতে লাগলেন, 

ভগবানের দিব্য আবির্ভাব লীলা (পর্ব - ০৩)

শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাবের শুভ দিনটি ছিল ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিন এবং একই সাথে চন্দ্রগ্রহণের দিন। বৈদিক বিধান হচ্ছে, গ্রহণকালে সবকিছু কলুষিত হয়ে যায়, তাই কলুষমুক্ত হওয়ার জন্য এদিন পবিত্র নদীতে গিয়ে দিব্যনাম কীর্তনযোগে স্নান  করতে হয়। তাই প্রায় সমস্ত নবদ্বীপের হাজার হাজার মানুষ গঙ্গায় গিয়ে কীর্তন করতে থাকে, “গোবিন্দ! গোবিন্দ! হরেকৃষ্ণ! হরিবোল!”
মুসিলমরা এসব দেখে বলতে থাকে, “এই হিন্দুরা এসব কী করছে? তারা বলছে


Thursday, 17 March 2016

ভগবানের দিব্য আবির্ভাব লীলা (পর্ব - ০২)

তাই অদ্বৈত হুঙ্কার করে বলতে লাগলেন, “হে কৃষ্ণ! হে কৃষ্ণ! এবং গঙ্গাজল ও তুলসী দিয়ে শালগ্রাম শিলার পূজা করতে লাগলেন। তিনি উপবাস করে জোরে জোরে চিৎকার করলেন, “হে প্রভু! দয়া করে নেমে আসুন। যদি আমার নাম অদ্বৈত হয় (যার মানে হচ্ছে অভিন্ন)। তাহলে আমার নামকে সত্যে পরিণত করুন। আপনি নেমে আসুন। গৌরাঙ্গ! গৌরাঙ্গ!” শ্রীবাস ঠাকুরও প্রকৃত ভাগবত ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে নেমে আসার জন্য কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তাই ভগবান, জগন্নাথ মিশ্র ও শচীমাতার পরিবাওে আবির্ভূত হলেন।
একদিন জগন্নাথ মিশ্র এক স্বপ্ন দেখলেন, হঠাৎ একটি উজ্জ্বল আলো তাঁর হৃদয়ে 


ভগবানের দিব্য আবির্ভাব লীলা (পর্ব - ০১)

ভগবান শ্রীচৈতন্যদেবে আবির্ভাব লীলা খুবই অসাধারণ। তখন নবদ্বীপের অবস্থা ছিল একটু অন্যরকম। আমরা জানি যে, ভারতবর্ষ হচ্ছে ধর্মক্ষেত্র। কিন্তু আমরা শ্রীমদ্ভাগবত থেকে এটাও জানতে পারি যে, সেখানে বিভিন্ন রকমের ধর্ম ছিল। সনাতন ধর্ম বা ভাবগবত ধর্মেও পাশাপাশি বিভিন্ন অধর্মও ছিল। এখন সারা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান উপধর্মও দেখা যায়, যা ধর্মেও মতো মনে হলেও বস্তুতপক্ষে ছলধর্ম বা কপটধর্ম। কিছু কিছু লোক হঠযোগের অনুশীলন করে থাকে, কেউ কেউ একে ধর্ম বলেও দাবি করে, কিন্তু তারা শুধু সুস্বাস্থ্যেও জন্য এটি করছে কেউ ধর্মীয় কারণে যোগ অনুশীলন করে না, যদিও সেটা আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য নির্দেশিত। এরকম আরো বিভিন্ন রকম চর্চা আছে, যা প্রকৃতপক্ষে সঠিক ধর্ম নয়।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবের ঠিক পূর্বে লোকজন অনুষ্ঠানসর্বস্ব ধর্মের জন্য পাগল ছিল। যেগুলো প্রকৃতপক্ষে শুধু


নবদ্বীপে ব্রহ্মার গৌরাঙ্গ রূপের ধ্যান (পর্ব - ০২)

ব্রহ্মা ভগবানের কৃপা লাভের জন্য জপ করতে লাগলেন, “গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ, গৌরাঙ্গ”। তার বারংবার প্রার্থনাং শ্রীচৈতন্যদেব আবির্ভূত হলেন।
ব্রহ্মা তড়িঘড়ি কওে উঠে প্রণতি নিবেদন করলেন। তিনি কিছু বলতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু অপাকৃত আনন্দে তিনি আত্মহারা হলেন। কৃষ্ণ ব্রহ্মাকে বিনয়ী করার মাধ্যমে আনন্দ দান করেছিলেন- এখন ব্রহ্মা শ্রীচৈতন্যদেবের দর্শন লাভ করে সত্যিই অসীম আনন্দ লাভ করলেন।
শ্রীচৈতন্যদেব জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি চাও? আমায় ডাকছ কেন?” তারপর ব্রহ্মা বললেন,“ হে প্রাণনাত, আমি

নবদ্বীপে ব্রহ্মার গৌরাঙ্গ রূপের ধ্যান (পর্ব - ০১)

বৃন্দাবন লীলায় ব্রহ্মা কৃষ্ণের গোবৎস এবং গোপবালকদের চুরি করার পর, কৃষ্ণ নিজেকে গোবৎস ও গোপবালকরূপে বিস্তার করেন। কৃষ্ণ যেকোন কাজ করতে পারেন। তিনি স্বতন্ত্র এবং তিনি সবকিছু এমনভাবে করেন যাতে কেউ বুঝতেই পারবে না যে, তিনি তা করছেন। তাঁর জন্য এটি খুবই স্বাভাবিক।
কৃষ্ণ গোবৎসগুলো খুঁজছিলেন। যখন ব্রহ্মা দেখলেন কৃষ্ণ গোপবালকদের কাছ থেকে দূরে আছেন, তখন তিনি কৃষ্ণের ক্ষমতা দেখার জন্য গোপবালকদের হরণ করেন। কৃষ্ণ ফিরে এসে গোপবালকদেরও খুঁজতে লাগলেন। মাঝে মাঝে কৃষ্ণ

দ্বারকায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে নারদমুনির সাক্ষাৎ (শেষ পর্ব)

এভাবেই শ্রীকৃষ্ণ ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন যে, তিনি কলিযুগে আবার গৌরাঙ্গরূপে আসবেন। আর তিনি নারদমুনিকে বললেন “আপনি সকল দেবতাকে ভারতবর্ষে আবির্ভূত হতে বলুন। আমরা সমস্ত জগৎ হরিনাম সংকীর্তন দ্বারা প্লাবিত করব।”

হয়ত আমাদের ভক্তদের অনেকেই শ্রীমন্মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলনে যোগদান করার জন্য উচ্চতন গ্রহলোক থেকে নেমে এসেছেন। হতে পারে তাঁরা সেটা জানেনও না। কিন্তু ভক্ত সংকীর্তন আন্দোলনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথেই যোগদান করেছেন। এটি একটি প্রমাণ যে, পূর্বজন্মে ভক্তিযোগের সাথে তাঁদের সম্পর্ক ছিল। তাই নারদমুনি বিভিন্ন

Saturday, 12 March 2016

দ্বারকায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে নারদমুনির সাক্ষাৎ (১ম পর্ব)

শ্রীচৈতন্যমঙ্গলে বর্ণিত হয়েছে, নারদমুনি আগে থেকেই জানতে পেরেছিলেন যে, কলিযুগ অতি শ্রীঘ্রই আসছে। তিনি কলিযুেগের সমস্ত সমস্যার সমাধান জানতে দ্বারকায় শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে যান। সে সময় শ্রীকৃষ্ণ সত্যভামার প্রাসাদে ছিলেন এবং তিনি রুক্মিণীকে খবর পাঠিয়েছিলেন যে, পরে তিনি তাঁর প্রাসাদে আসবেন। তাই তিনি তাঁর পরিচারিকাগণের সাথে প্রাসাদটি সজ্জিত করলেন, পুত্রদের সুন্দরভাবে সাজালেন, বৈদিক মন্ত্র আবৃত্তি করতে পণ্ডিতদের আনা হলো, জলপূর্ণ ঘট, কলাগাছ ও আখ আনা হলো- শ্রীকৃষ্ণকে স্বাগত জানানোর জন্য সব কিছুর আয়োজন করা হলো। তাই যখন কৃষ্ণ এলেন, তখন তাঁকে সত্যিই চমৎকারভাবে অভিবাদন জানানো হলো। পিতাকে আলিঙ্গন করার জন্য তিনি তাঁর সন্তানদের পাঠালেন। তারপর শ্রীকৃষ্ণকে অন্দরমহলে নিয়ে গেলেন। কৃষ্ণকে একটি বিশেষ আসনে বসালেন এবং পদধৌত করে পূজা করতে লাগলেন।
ঠিক তখনই রুক্মিণী কাঁদতে শুরু করলেন;শ্রীকৃষ্ণ তা দেখে অবাক হয়ে ভাবছিলেন, ‌‌‍‌‌'আমাকে

মহাপ্রভুর শিক্ষা জীবন


শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পিতা জগন্নাথ মিশ্রকে এক জ্যোতিষী বলেছিলেন যে তাঁর বড় ছেলে সন্ন্যাস গ্রহণ করবেন। তিনি ভয় পাচ্ছিলেন হয়ত নিমাইও সন্ন্যাস গ্রহণ করবে। তাই তিনি ভাবলেন এই সমস্যা সমাধানের একটাই উপায়, তা হলো নিমাইকে শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত রাখা, তাহলে সে অশিক্ষিত হয়ে ঘরে থেকে যাবে।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু পাঠশালায় যেতে চাইতেন, কিন্তু পিতা মাতার আপত্তির জন্য যেতে পারতেন না্, তাই তিনি অনেক দুষ্টুমি করতেন। তাঁর বয়স তখন প্রায় পাঁচ বছর।
তিনি প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে শিশুদের কানে জল ঢেলে দিতেন আর তারা কান্না করত। তিনি গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে মাঝে মাঝে পুরুষদের কাপড় নিয়ে মহিলাদের কাপড়ের সাথে মিশিয়ে রাখতেন। তাঁরা স্নান করে উঠে এলে খুব লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।
কখনো কখনো ব্রাহ্মণরা যখন গঙ্গা তীরে

Friday, 11 March 2016

যুগাবতার

পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মার একদিনে একবার এই পৃথিবীতে অবতরণ করেন। সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি- এই চারটি যুগ এক হাজার বার আবতির্ত হলে ব্রহ্মার একদিন হয়। শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপর যুগে অবতরণ করেন, আর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু অবতরন করেণ করেন কলহ ও কপটতাপূর্ণ কলিযুগে, যা প্রায় পাচঁ হাজার বছর আগে শুরু হয়েছে।
কলি যুগে সুখী হওয়া খুব দুষ্কর ব্যাপার। কিন্তু এ যুগের একটি বিশেষ